Sunday 22 September 2019

সরকারী ব্যাংকের চাকরীর সুযোগ সুবিধা

সরকারী ব্যাংকের চাকরীর সুবিধাসমূহ নিম্নরূপ।ব্যাংক ভেদে আলাদা হতে পারে,আমার ভুল ও হতে পারে অনেকক্ষেত্রে,ভুল ধরায়া দিয়ে বাধিত করবেন।
১.চাকরীর পাচ বছর হইলে ৩ লাখ টাকা মোটর সাইকেল লোন পাবেন।
২. চাকরীর ৫ বছর হইলে ব্যাংক ভেদে ৮০ লাখ- ১ কোটি টাকা হাউজবিল্ডিং লোন পাবেন।এই লোন নিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে পারেন বা জমিতে বাসা বানাইতেও পারেন।লোনের কিস্তি আপনার বেতন থেকেই কেটে নিবে।
৩.চাকরীর এক বছর হইলে ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা কম্পিউটার লোন পাবেন। সব লোনের রেট ব্যাংক রেটে অর্থাৎ ৫%।
৪.ব্যাংকে প্রতিদিন অফিসে গেলেই ২০০ টাকা করে লাঞ্চ ভাতা পাবেন। ২০ দিন অফিস করলে ৪০০০ টাকা।
৫। এজিএম হওয়ার পরেই গাড়ি কেনার জন্য সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা লোন পাবেন এবং গাড়ির মেইনটেইনেন্স এর জন্য মাসে মাসে পাবেন ৪০ হাজার টাকা। তার মানে যে মেইনটেইনেন্স খরচ পাবেন ওটা দিয়েই গাড়ির লোনের কিস্তি হয়ে যাবে।
৬. সিনিয়র অফিসার হিসেবে জয়েন করলে প্রথম প্রমোশান পাবেন সিনিয়র অফিসার থেকে প্রিন্সিপাল অফিসার।আর তাতে আপনার স্যালারি নাইন্থ গ্রেডের ২২০০০ টাকা থেকে সরাসরি সিক্সথ গ্রেডের ৩৫০০০ টাকাতে চলে যাবে।
৭. এক বছর পরে প্রায় আড়াই লাখ টাকা লিমিট সহ একটা ক্রেডিট কার্ড পাবেন। যেটার রেট অন্য ব্যাংকের চেয়ে অনেক কম।
৭. ব্যাংকে ১২ মাস চাকরী করলে ১৮ মাসের বেতন পাওয়া যায়।প্রফিটের উপরে ৩ থেকে ৫টি ইনসেন্টিভ বোনাস পাবেন। অর্থাৎ আপনার বেসিক বেতন যদি ৩০ হাজার টাকা হয় প্রতি বছরে একবার ৯০ হাজার(৩বোনাস) থেকে দেড় লাখ টাকা(৫টি বোনাস) পর্যন্ত ইনসেন্টিভ বোনাস পেতে পারেন। সাথে দুই ঈদ বোনাস, পহেলা বৈশাখ বোনাস(বেসিকের ২০%) তো আছেই।
৮. রূপালী,কৃষি, রাকাউব বাদে বাকি ব্যাংকগুলোতে পেনশান নাই।অর্থাৎ অবসরের পরে আপনি বা আপনার স্ত্রী মাসে মাসে কোন ভাতা পাবে না।তবে অবসরকালীন সময়ে যে টাকা পাবেন ওটাও আপনাকে কোটিপতি বানিয়ে দিতে অনেকাংশে এগিয়ে নিবে।
নিয়োগ প্রক্রিয়া
সরকারি ব্যাংক এবং বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সাধারণত কিছু পার্থক্য রয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যখন সকল অনুষদের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে, তখন বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ব্যবসায় শিক্ষার ছাত্র ছাত্রীদেরকে বেশী প্রাধান্য দেওয়া হয়।
সরকারী যে কোন ব্যাংকের চাকুরির বিজ্ঞাপন এর জন্য প্রধানত বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ, জাতীয় পত্রিকা থেকে শুরু করে চাকরির ওয়েবসাইট এবং ব্যাংকগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইটে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়ে থাকে।
সরকারি ব্যাংকে নিয়োগ প্রক্রিয়া
সরকারী ব্যাংকগুলোতে মূলত তিনটি পদের জন্য সদ্য স্নাতকদের নিয়োগ করা হয়-
১। সুপারভাইজার
২। অফিসার
৩। সিনিয়র অফিসার
এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু লোক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন- IT (Information Technology), Accounting ইত্যাদি শাখায় নিয়োগ। একে ব্যাংকিং এর ভাষায় বলা হয়ে থাকে ‘Special Recruitment’। কিন্তু এ ধরনের নিয়োগ সচরাচর দেয়া হয়না। সাধারণত কোনো একটি বিষয়ে পারদর্শী এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকদেরকে এক্ষেত্রে নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া
সাধারণত বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ভর করে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব (নীতিমালার) উপর। কিছু ব্যাংক আছে যাদের নিয়োগের প্রক্রিয়া অনেকটা একইরকম হয়ে থাকে, আবার কিছু কিছু ব্যাংক আছে, যারা নিজেদের মতো করে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সাজিয়ে নেয়।
মূলত চারটি এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে কর্মী নিয়োগ করা হয়ে থাকে। এই এন্ট্রি পয়েন্ট গুলো হচ্ছে: Tailored Recruitment, General Banking Recruitment, Management Trainee Officer (M.T.O) or Probationary Officer (P.O) Recruitment, Lateral Recruitment।
Tailored Recruitment
বেসরকারী ব্যাংকের Tailored Recruitment এ সাধারনত নতুন চাকরিপ্রার্থীদের কোনো একটি নির্দিষ্ট পদের জন্য নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
যেমন-কোনো একটি ব্যাংকে ক্যাশিয়ার পদ খালি থাকলে ব্যাংক তাদের চাকরির বিজ্ঞাপনে সেই কথাটি উল্লেখ করে দিবে। এই পদ্ধতিতে নিয়োগ প্রাপ্তদের পুরো ব্যাংক ক্যারিয়ারটিই সাধারণত ক্যাশ শাখায় কেন্দ্রীভূত হয়ে থাকবে। ব্যাংকিং এর ভাষায় একে ‘Tailored Recrutiment’ বলা হয়ে থাকে।
যোগ্যতা-
যে কোন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রীধারীরা এ পদে আবেদন করতে পারে। তবে কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে (যেমন-এম বি এম ডিগ্রি)। প্রত্যেক পরীক্ষায় কমপক্ষে ২য় শ্রেণী প্রাপ্ত হতে হবে।
Management Trainee Officer (M.T.O) or Probationary Officer (P.O) Recruitment
প্রত্যেকটি ব্যাংকের M.T.O বা P.O পদের জন্য বিশেষভাবে অত্যন্ত যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করা হয়ে থাকে। আকর্ষণীয় বেতনের পাশাপাশি এই পদধারী ব্যক্তিদের পদোন্নতিও হয় খুব তাড়াতাড়ি।
M.T.O বা P.O দের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় কোনো পদ থাকে না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং প্রবেশনারী পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর তাদেরকে সিনিয়র অফিসার অথবা প্রিন্সিপাল অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে যারা ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছেন, তাদের অনেকেই চাকরি জীবনের শুরুতে M.T.O বা Probationary Officer হিসাবে শুরু করেছিলেন। তবে এই দুটি পদের মধ্যে বেশ কিছু সামঞ্জস্য থাকলেও সামান্য কিছু পার্থক্যও রয়েছে। কোন কোন ব্যাংকে সদ্য স্নাতকদের M.T.O হিসেবে বা P.O পদে নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
M.T.O ও Probationary Officer পদে নিয়োগ প্রাপ্তদের প্রাথমিক বেতন ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা হয়ে থাকে। অভিজ্ঞতার সাথে সাথে বেতনের পরিমাণ বাড়ে।

M.T.O দের বলা হয়ে থাকে ‘They are the future leaders of the bank’। অর্থাৎ তারাই হচ্ছেন একটি ব্যাংকের ভবিষ্যতের কাণ্ডারি। প্রবেশনারি পিরিয়ড শেষে একজন MTO-কে কি পদে অধিষ্ঠিত করা হবে তা নির্ভর করে উক্ত ব্যাংকের নীতিমালা, MTO-এর প্রবেশনারি পিরিয়ডের কর্মদক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের এর উপর।
যোগ্যতা-
সাধারণত সব বিভাগের ডিগ্রিধারী ছাত্র-ছাত্রীরা M.T.O বা P.O পদে আবেদন করতে পারেন। তবে কিছু কিছু বেসরকারি ব্যাংকে নির্বাচিত কিছু বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। যেমন- ব্যবসায় প্রসাশন, ইংরেজি, পরিসংখ্যান, অর্থনীতি, গণিত ইত্যাদি। সাধারণত চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩০ বছর নির্ধারণ করা হয়।
অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা
ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে মূল বেতনের পাশাপাশি আরও কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সেগুলো হলো-
– বছরে দু’টি আনুষ্ঠানিক ভাতা।
– লভ্যাংশে বোনাস বছরে প্রায় দুই-তিনটি।
– চাকরিজীবী ঋণ, কম্পিউটার ঋণ, গৃহ ঋণ ইত্যাদি।
আবার একটি ব্যাংকে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন প্রকল্প, বেসরকারি কোম্পানি, এবং অন্যান্য ব্যাংকেও চাকরির সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বৈদেশিক ব্যাংকগুলোর অন্যান্য দেশেও শাখা আছে। ভালো কর্মদক্ষতার উপর নির্ভর করে এসব বৈদেশিক শাখাতেও আপনি চাকরির সুযোগ পেতে পারেন। ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার উপর ভিত্তি করে বেতন বাড়তে থাকে।

0 Comments:

Post a Comment